লরেন্সে স্টেইনবার্গের ভাল প্যারেন্টিংয়ের ১০টি নীতি- বদলে দেবে আপনার শিশুর বেড়ে ওঠা।

সঠিক উপায়ে বাচ্চা লালন-পালন করা পিতামাতার জন্য সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং একটা কাজ এবং একইসাথে একটি বিমেষ প্রাপ্তিও। আমরা প্রায়শই শিশুদের উপর আমাদের যা ইচ্ছে হয় তাই আরোপ করি অথবা আমাদের পিতামাতার ব্যবহৃত একই প্যারেন্টিং কৌশলগুলি ব্যবহার করি। হোক সেটি কার্যকর প্যারেন্টিং দক্ষতা কিংবা না হোক- তা নিয়ে ভাবিনা। প্যারেন্টিং সামাজ বিজ্ঞানের অন্যতম প্রধান গবেষণা ক্ষেত্র। আপনার প্যারেন্টিং স্টাইলটি কী এবং আপনার প্যারেন্টিং কতটুকু ইফেক্টিভ সেসব নিয়ে প্রচুর গবেষণা হয়েছে ইতোমধ্যেেই।

"The Ten Basic Principles of Good Parenting" বইয়ে, লরেন্স স্টেইনবার্গ, পিএইচডি, তাঁর প্রায় ৭৫ বছরের সামাজিক বিজ্ঞানের গবেষণার উপর ভিত্তি করে প্যারেন্টিংয়ের টিপস এবং গাইডলাইন সরবরাহ করেন। যেগুলি অনুসরণ করে, আপনি আপনার শিশুর আচরণগত সমস্ত ধরণের সমস্যা এড়াতে পারেন বলে তিনি মনে করেন।

তাহলে লরেন্সের ভাল প্যারেন্টিংয়ের নীতিগুলি কীকী?

১) প্রথমত আপনি কেমন সেটা গুরুত্বপূর্ণ। আপনি অন্য লোকদের সাথে যেভাবে আচরণ করেন তা থেকে আপনার বাচ্চারা শিখে মানুষের সাথে কখন কেমন আচরণ করতে হবে। এটাকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নীতি বলে মনে করেন স্টেইনবার্গ।

২) আপনি খুব বেশি লাভিং হতে পারবেন না। স্টেইনবার্গ লিখেছেন, " ভালোবাসা কোনও শিশুকে পথভ্রষ্ট করেনা- এটাই স্বাভাবিক"। তবে অত্যধিক ভালবাসা দেখাতে গিয়ে আমরা কখনো কখনো শিশুদের প্রয়োজনের বেশি লাই দিয়ে ফেলি। যার ফল কখনো ভাল হয়না।


৩) আপনার সন্তানের জীবনের সাথে জড়িয়ে থাকুন। এর অর্থ তাদের পারসোনাল লাইফে নাক গলানো নয় বরং মনিটরিং করা যে তারা ভুলভাল শিখছে কিনা বা কোন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে কিনা। অন্যদিকে আপনি সন্তানের জন্য আপনি যা ভাল মনে করছেন, সেটা আসলেই তার প্রয়োজন আছে কিনা- বা সে চায় কিনা- তা বোঝা।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ইনভলভড থাকার অর্থ এই নয় সন্তানের হোমওয়ার্ক করা বা এটি সংশোধন করে দেওয়া। স্টেইনবার্গ বলেছেন, "হোমওয়ার্ক দেওয়া মাধ্যমে শিক্ষকরা যাচাই করেন আপনার সন্তান কতটুকু শিখছে।" আপনি যদি হোমওয়ার্ক করেন তবে আপনি শিক্ষককে বুঝতে দিচ্ছেন না শিশু কতটুকু শিখছে ।

৪) আপনার সন্তানের সাথে মানিয়ে নিতে আপনার প্যারেন্টিংকে ইভলভ করুন। আপনার সন্তানের বিকাশের সাথে তাল মিলিয়ে চলুন। আপনার বাচ্চা বড় হচ্ছে। বয়স কীভাবে সন্তানের আচরণকে প্রভাবিত করছে তা বিবেচনা করুন।


৫) কিছু নিয়ম তৈরি করুন। "আপনি যদি ছোট থেকে আপনার সন্তানের আচরণ ম্যানেজ না করেন, তাহলে ও যখন বয়সে বড় হবে তখন কীভাবে নিজেকে পরিচালনা করতে হয়, কিভাবে আডজাস্ট করতে হয়- এসব শিখতে ওর কষ্ট হবে। এটাই স্বাভাবিক।
যেকোনও সময় আপনার সর্বদা সক্ষম হওয়া উচিত এই তিনটি প্রশ্নের উত্তর দিতে: আমার বাচ্চাটি কোথায়? আমার সন্তানের সাথে কে আছে? আমার শিশু কী এখন করছে?
"তবে আপনি আপনার সন্তানকে মাইক্রো ম্যানেজ করতে পারবেন না," স্টেইনবার্গ নোট করেছেন।মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আসার পর বাচ্চাকে তাদের নিজের কাজগুলো নিজে নিজে করতে দেওয়া উচিত, তাদেন নিজস্ব পছন্দ ও মতামতে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়।

৬) আপনার সন্তানের স্বাধীনতায় একটা সীমারেখা টেনে দিন যতদিন প্রাপ্তবয়স্ক না হয়। "সীমাবদ্ধতা নির্ধারণ আপনার শিশুকে আত্ম-নিয়ন্ত্রণের স্কিল বিকাশে সহায়তা করবে। পাশাপাশি নিজস্ব স্বাধীনতার ব্যাপারে উৎসাহিত করা তাকে সেলফ- ডিরেকশনের বোধ তৈরি করতে সহায়তা করে। বাচ্চারা স্বাধীনতা লাভের ব্যাপারে উদগ্রীব থাকে কারণ এটাই হিউম্যান ন্যাচার। আপনাকে বোঝাতে হবে কতটুকু স্বাধীনতা তার বয়সের জন্য ঠিক।

৭) সামঞ্জস্যপূর্ণ নিয়ম তৈরি করুন। "যদি আপনার নিয়মগুলি দিনে দিনে অবিশ্বাস্য ফ্যাশনে পরিবর্তিত হয় আর আপনি যদি এগুলি কেবল বিরতিহীনভাবে প্রয়োগ করেন তবে আপনার সন্তান মিসবিহেভ করা শুরু করবে। অবাস্তব কোনকিছু এক্সপেক্ট করবেন না।

৮) কঠোর অনুশাসন এড়িয়ে চলুন। স্টেইনবার্গ বলেছেন যেকোন পরিস্থিতিতে বাবা-মা'র সন্তানকে আঘাত করা উচিত নয়। তিনি লিখেছেন, "যেসব শিশুদের আঘাত করা হয় বা চড়-থাপ্পর মারা হয় তাদের মধ্যে অন্য শিশুদের মারধর করা প্রবণতা বেশি থাকে।"

৯) আপনার সিদ্ধান্তগুলোর যথার্থতা ব্যাখ্যা করুন। আপনার অভিজ্ঞতা থেকে যে বিধিনিষেধও আপনি তৈরি করেছেন এবং শিশুদের উপর আরোপ করছেন- সেগুলো যেনো তারকাছে জবরদস্তি বা চাপিয়ে দেওয়া- মনে না হয়।

১০) আপনার সন্তানের সাথে সম্মানসূচক আচরণ করুন। স্টেইনবার্গ লিখেছেন, "আপনার সন্তানের কাছ থেকে সম্মানজনক আচরণ লাভের সর্বোত্তম উপায় হল তাকেও সম্মান দেওয়া।" "আপনার বাচ্চাকে একই সৌজন্য দেখানো উচিত যা আপনি অন্য কাউকে দেন। তাদের সাথে নম্রভাবে কথা বলুন, তাদের মতামতকে আমলে নিন। সহনশীল হোন।

মনে রাখবেন, আপনার সন্তানের সাথে আপনার সম্পর্ক কেমন- সেটাই অন্যের সাথে তাদের সম্পর্কের ভিত্তি। আপনার সন্তান আপনার কাছ থেকে যে নিয়ম শিখেছে সেগুলিই ভবিষ্যতে তার দায়িত্বশীল প্যারেন্টিংকে শেপ দিবে।

Comments

Sex Education Bangla

ফিমেল অর্গাজম সম্পর্কে ৭টি তথ্য- যা আপনার অবশ্যই জানা উচিত।

মেয়েদের অর্গাজম সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন।

পেনিসের স্বাভাবিক আকৃতিগুলো কি কি?